
প্রকাশিত: ০৬, ডিসেম্বর - ২০১৯ - ০৩:১৩:২৫ PM
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ২০১১ সালের নভেম্বরে গঠিত কমিটিতে সভাপতি হন আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান। বর্ষিয়ান এই নেতা মারা যান ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। এরপর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান এডভোকেট লুৎফুর রহমান চৌধুরী।
কিন্তু বয়োবৃদ্ধ লুৎফুর দলের কর্মকাণ্ডে ততোটা সময় দিতে পারতেন না। এছাড়া তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করে আসছেন। এছাড় জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইফতেখার হোসেন শামীম প্রয়াত। সহসভাপতি পদে থাকা ইমরান আহমদ সিলেট-৪ আসনের সাংসদ ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস সিলেট-৩ আসনের সাংসদ; আরেক সহসভাপতি আশফাক আহমদ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। জনপ্রতিনিধি হওয়ায় দলীয় কর্মকান্ডে তাঁরা খুব বেশি সময় দিতে পারেন না।
এরকম অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগকে সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রায় একাই টেনে টানছিলেন, এরকম অভিমত দলটির নেতাকর্মীসহ সিলেটবাসীর। তাদের ধারণা ছিল এবারের সম্মেলনেও শফিক চৌধুরীকে সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদে দেখা যাবে। কিন্তু সেটি হল না। গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদের কোনটিতেই নেই শফিক চৌধুরী।
প্রবাস থেকে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ওঠে আসা শফিকুর রহমান চৌধুরীর খ্যাতি রয়েছে কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে। যেকোনো নেতাকর্মী ডাকলেই তাকে কাছে পায় এমন খ্যাতিও রয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ঘোষিত নামে শফিকুর রহমান চৌধুরীর না থাকা বিস্মিত নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শফিকের বাসায় গিয়ে আফসোসও প্রকাশ করতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে। কেউ কেউ নাম ঘোষণার পরে মাঠেই কেঁদে ফেলেন।
এমনকি যারা বিভিন্ন পদে প্রার্থী ছিলেন তারাও শফিককে কমিটিতে না রাখায় আফসোস করেন। সন্ধ্যার পর থেকে দলের হাজারো নেতাকর্মী বাসায় গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে দেখা গেছে। শফিকও এসময় আবেগাপ্লুত হয়ে অনেকবার কেঁদেছেন। গভীর রাত পর্যন্ত বাসায় ভিড় ছিলো নেতাকর্মীদের।
এদিকে শফিক চৌধুরীর পক্ষে-বিপক্ষের অনেকেই কুশিয়ারার কূলকে বলেন, আমরা বিশ্বাসই করতে পারছি না শফিক চৌধুরী বিহীন কমিটি হবে সিলেট আওয়ামী লীগে।
আমরা সবাই শুনে আসছি শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে ত্যাগী ও দলের জন্য নিবেদিত অন্তপ্রাণ, কর্মীবান্দব নেতা দিয়ে সৃষ্টি গঠন হবে আওয়ামী লীগের প্রতিটি কমিটি। কিন্তু আমরা সিলেটবাসী কী দেখলাম। দেখলাম- শফিকুর রহমান চৌধুরীর মত সৎ, ত্যাগী, বিনয়ী ও কর্মীবান্দন দলের জন্য অন্তপ্রাণ ব্যক্তি ছাড়াই কমিটি করা হল। এতে কী বুঝায়? শুদ্ধি অভিযান শুধু মুখের কথা, নাই কোন বাস্তবতা।